আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা, আমাদের দেশে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বনাঞ্চলে ও শালবনে পাওয়া যায় এমন একটি উদ্ভিদের নাম হচ্ছে শতমূলী।
বন্ধুরা, শতমূলী কে প্রচলিত ভাষায় শতমূলী গাছ বলা হয়। আর আয়ুর্বেদিক এর ভাষায় একে শতাবরী, শতমূলী প্রভৃতি নামে চেনা যায়।
কিভাবে শতমূলী গাছ চিনবেনঃ
শতমূলী গাছ একটি লতানো উদ্ভিদ। বিশেষ করে শতমূল যেটাকে বলা হয়, সেটা হচ্ছে শতমূলী গাছের কন্দমূল।
আমাদের দেশে এমন অনেকে আছে যারা শতমূলী কি এবং শতমূলীর উপকারিতা সম্পর্কে জানেনা। তাই আপনাদের সকলের উপকারের জন্য আজকে আমার এই আলোচনা।
শতমূলী একটি লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এটি আঁকা বাঁকা হয়ে বেড়ে ওঠে। বিশেষ করে শরৎকালে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে এর মূল হয়। ফাল্গুন মাসে ফল পাকে। কাঁচা অবস্থায় ফল সবুজ হয়, আর পাকলে লাল দেখা যায়।
বাড়ির শোভা বৃদ্ধির জন্য শতমূলীর উপকারিতাঃ
অনেকেই বাড়ির শোভা বৃদ্ধির জন্য শখ করে বাড়ির সামনে বা পিছনে অথবা বাগানে শতমূলী গাছ রোপণ করে থাকে।
শতমূলীর রাসায়নিক উপাদানঃ’
শতমূলীতে রাসায়নিক উপাদান হিসাবে এর মূলে শর্করা ও গ্লাইকোসাইড এবং পাতায় সেপানিন বিদ্যমান থাকে। যেহেতু শতমূলীতে শর্করা থাকে তাই এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে শতমূলীর উপকারিতাঃ
যাদের শরীরে দুর্বলতা রয়েছে, অল্প পরিশ্রমে যাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, আপনারা শতমূলীর কাঁচামূলের রস ব্যবহার করতে পারেন। শরীরের দুর্বলতা কমাতে ১৫-২০ মিলিমিটার কাঁচা শতমূলীর রসের সাথে ২৫০ মিলি লিটার দুধ, সাথে ১চা চামচ পানি মিশিয়ে মিক্স করে একটি সিরাফের মত তৈরি করে নিবেন। যখন সকাল-বিকেল আপনি এটি ২ টেবিল চামচ সেবন করবেন, খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আপনার শারীরিক দুর্বলতা কমে যাবে।
স্তন্যদুগ্ধ বাড়াতে শতমূলীর উপকারিতাঃ
যে সকল মায়েদের সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে স্তন্যদুগ্ধ কমে যায়, আপনারা চাইলেই শতমূলীর কাঁচা রস ব্যবহার করতে পারেন স্তন্যদুগ্ধ বাড়ানোর জন্য। শতমূলীর১৫-২০ মিলিমিটার কাঁচা রসের সাথে ২৫০ মিলিমিটার মধু এবং ১চা চামচ চিনি মিশিয়ে যদি আপনি সকাল বেলা খালি পেটে এবং বিকেল বেলা সেবন করেন, আপনার স্তনদুগ্ধ বেড়ে যাবে। এতে আপনার শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পাবে।
যৌন সমস্যার সমাধানে শতমূলীর উপকারিতাঃ
বন্ধুরা, শতমূলী যে আমাদের কিভাবে উপকার করে সেটা আপনারা ব্যবহার না করার আগে বুঝতেই পারবেন না। এটা সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয় যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে।
শতমূলী উদ্ভিদের মূলকে ছোট ছোট টুকরো করে হাড়িতে রাখবেন, একটি হাডিতে ২৫০ গ্রাম দুধ নিয়ে তার মধ্যে কাটা শতমূলী মুল গুলো দিন। কিছুক্ষণ আগুনের তাপ দিয়ে নামিয়ে ফেলুন।
হালকা ঠাণ্ডা হলে তার সাথে পরিমাণমতো চিনি মিশিয়ে যদি আপনি নিয়মিত খেতে পারেন,তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
স্বপ্নদোষের মতো সমস্যা সমাধানে শতমূলীর উপকারিতাঃ
যাদের রাতকানা রোগ আছে এবং যাদের স্বপ্নদোষ হয় আপনারা শতমূলীর রস একটা স্টিলের কড়াইতে রেখে তাতে ১০০ মিলিলিটার গাওয়া ঘি দিয়ে মিক্স করে খেলে স্বপ্নদোষের মতো সমস্যা এবং রাতকানা রোগের মতো সমস্যা ধীরে ধীরে কমে যাবে।
নোটঃ
শতমূলীর রস নিয়ম মেনে খেলে আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত উপকারের জন্য শতমূলীর বেশিদিন ক্রমাগত সেবন করতে থাকেন তাহলে আপনার পেটে গ্যাস হতে পারে সুতরাং এক্ষেত্রে একটু সতর্ক থাকবেন।
তাহলে বন্ধুরা, আপনারা বুঝতে পেরেছেন শতমূলী আমাদের জন্য কতটুকু উপকারী। আর দেরি না করে আপনার বাড়ির আশেপাশে বা আপনার বাড়ির আঙ্গিনায় একটি শতমূলী গাছ রোপন করতে আর দেরি করবেন না। ধন্যবাদ