ফলের উপকারিতা : বিভিন্ন ফলের গুনাগুণ ও উপকারিতা

বাংলাদেশ যেহেতু ঋতু বৈচিত্রের দেশ। প্রতিটি ঋতুতে নতুন নতুন ফলের চাষ আমাদের দেশে হয়ে থাকে।
নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে আমাদের দেশের অবস্থান হওয়ার কারণে যেকোনো ধরনের ফল খুব সহজে আমাদের দেশে উৎপাদন করা সম্ভব হয়। এই কারণে যেমন ঋতুবৈচিত্র্য আমাদের দেশে দেখা যায় ফলের বৈচিত্র ও রয়েছে সেই রকম।
আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ হওয়ায় খুব অল্প মূল্যে আমরা ফলের চাহিদা মেটাতে পারি। এখন চলুন ফলের উপকারিতা

সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে কিছু আলোচনা করা যাকঃ

আমদের জীবনে ফলের উপকারিতাঃ

কমবেশি সব ফলই কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু সব ফলের কথা একসাথে বলে শেষ করা যাবে না। তাই উল্লেখযোগ্য কিছু ফল নিয়ে আমরা আজ আলোচনা করবো।
যে ফলগুলো খুব বেশি সহজলভ্য প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় এবং আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী এমন কিছু ফল নিয়ে কথা বলব।

কলাঃ

ফলের মধ্যে কলা হল উল্লেখযোগ্য একটি ফল। কারণ খাদ্যে যতগুলো উপাদান থাকে তার প্রায় সব ধরনের উপাদান কলাতে বিদ্যমান। আর এটা বাজারে খুব সহজলভ্য এবং সারা বছরই পাওয়া যায়।
নিয়ম মেনে কলা খেলে আমাদের শরীরে ক্যালরির অভাব দূর হয়। হজমক্রিয়ায় সাহায্য করে, হার্টের সমস্যা থাকলে তা দূর হয়। ভালো ঘুম হয়।
ত্বক টানটান রাখতে কলার পেস্ট ভালো কাজ করে।

আমঃ

আম অনেক উপকারী একটি ফল। এটা কাঁচা এবং পাকা উভয় ভাবে খাওয়া যায়। এবং উভয়ভাবেই এটি আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।
কাঁচা আম শরীরের ওজন কমাতে দারুন ভাবে কাজ করে। মুখে রুচি বৃদ্ধি করে। ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করে। শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্ষত থাকলে তা সারিয়ে তোলে। এবং কাঁচা আমের আচার সংরক্ষণ করে সারা বছর আমরা খাবার হিসাবে খেতে পারি।
পাকা আম আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এটি লিভারের সমস্যা থাকলে তা প্রতিরোধ করে। ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে। এর পাশাপাশি দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে, আর আমাদের ত্বক কে অনেক বেশি সুস্থ ও সবল রাখে।

লিচুঃ

লিচু একটি মৌসুমী ফল। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং শরীরে খনিজ পদার্থের অভাব পূরণ করে।

আমলকিঃ

আমলকী সর্বগুণে গুণান্বিত একটি ফল। শরীরের অভ্যন্তরীণ শক্তি সামর্থ্য ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধরে রাখতে যেমন এই ফল কার্যকরী তেমনি শরীরের বাহ্যিক সৌন্দর্য ধরে রাখতে এই ফলের কিন্তু অনেক গুণ রয়েছে।
এই ফলে এমন শক্তি যা ৭টি আপেল এর সমতুল্য।
আমলকি চুলের যত্নে দারুন কাজ করে। আমলকির রস নিয়মিত চুলে লাগালে চুল গোড়া থেকে শক্ত হয়, এবং অনেক ঘন হয়।
পাশাপাশি আমলকি শরীরের রক্তে লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি শ্বেত রক্ত কণিকার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে শরীরকে রোগ প্রতিরোধ করার উপযুক্ত করে তুলে।

স্ট্রবেরিঃ

স্ট্রবেরি আমাদের দেশের নতুন ফল। কারণ এটি বাইরের দেশ থেকে এনে আমাদের দেশে নতুনভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে।ফলনতুন হলেও এর কিন্তু অনেক গুণাগুণ রয়েছে। এটি খাবার হিসেবে যেমন সুস্বাদু, তেমনি বিভিন্ন ধরনের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে।
যাদের কিডনি সমস্যা তারা কিন্তু নিয়ম মেনে খাবারের সাথে স্ট্রবেরি যোগ করে নিতে পারেন। শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে স্ট্রবেরি দারুন কাজ করে। আর স্ট্রবেরি নিয়ম মেনে খেতে পারলে শরীরের সৌন্দর্য ধরে রাখা সম্ভব হয়।

পেঁপেঃ

হলুদ যে কোন ফল শরীরের জন্য ভালো। সেটা হোক পেঁপে বা কাঁঠাল। পেঁপে এমন একটি ফল, কাঁচা বা পাকা উভয় অবস্থায় খাওয়া যায়।

পাকা পেঁপের বিচি কিন্তু কৃমি দমনে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। কাঁচা পেঁপে আমরা মুরববা হিসাবে খেতে পারি। এবং পাকা পেঁপে ফল হিসাবে খেতে পারি।
এটি আমাদের আমিষের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করে থাকে। এতে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।

Leave a Comment