রক্তদানের উপকারিতা : ‌নিয়‌মিত রক্তদা‌নের উপকা‌রিতা

আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব রক্তদানের উপকারিতা নিয়ে। যেকোন পূর্ণবয়স্ক নর-নারী অর্থাৎ ১৮ বছরের উপরের যেকোন সুস্থ পুরুষ অথবা নারী অন্য কাউকে স্বেচ্ছায় রক্ত দান করাকে রক্ত দান বলা হয়ে থাকে। আর এটি আমাদের জন্য অনেক উপকারী এর কোন ধরনের সাইডএফেক্ট থাকেনা। তাই একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর রক্ত দান করতে পারে।

রক্তদানের উপকারিতাঃ

রক্তদানের সর্বপ্রথম যে উপকারিতা তা হল……
রক্ত দানের মাধ্যমে অন্য জনের জীবন বাঁচানোঃ
রক্ত দানের মাধ্যমে নিজের কোন ক্ষতি হয় না। কারণ প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর আমাদের শরীর থেকে অনেকগুলো রক্তকোষ মরে যায়, আবার নতুন রক্ত কোষ উৎপন্ন হয়।
তাই আমরা খুব সহজে অন্যজনকে এই রক্ত দিয়ে দিতে পারি। এতে করে একজন অসুস্থ রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়।

রক্ত দানের মাধ্যমে নিজের শরীর সুস্থ আছে কিনা দেখাঃ

প্রতি তিন মাস পর পর আমরা আমাদের শরীরের চেকআপ করিয়ে নিতে পারি, কোন ধরনের সংক্রমণ রোগ আমাদের শরীরে আক্রমণ করলো কিনা সেটা আমরা জেনে নিতে পারি। কারণ অন্য কাউকে রক্তদান করার আগেই নিজের রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয়, আর এর মধ্য দিয়ে আমরা অন্যজনকে সুস্থ রক্ত দেওয়ার পাশাপাশি নিজের শরীর সুস্থ আছে কিনা সে বিষয়েও নিশ্চিত হতে পারি।

রক্ত দানের মাধ্যমে শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়ঃ

একজন সুস্থ সবল মানুষ রক্তদান করলে তার শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়। আর এতে করে আমাদের শরীরে বেশি ফ্যাট ঝরিয়ে শরীর সুস্থ এবং স্বাভাবিক থাকে। এর পাশাপাশি আমাদের শরীরে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রক্ত দানের মাধ্যমে অস্থিমজ্জায় প্রচুর পরিমাণে রক্ত উৎপাদন হয়ঃ
একজন অসুস্থ রোগীকে যখন রক্ত দেওয়া হয়, তখন রক্তদাতার স্বাভাবিকভাবে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এতে করে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত উৎপাদনের জন্য অস্থি মজ্জা অনেক বেশি কাজ করে এবং অস্থিমজ্জায় প্রচুর পরিমাণে রক্ত উৎপাদন হয়।
এতে করে আমাদের শরীর অনেকটা সক্রিয় থাকে। এটি আমাদের শরীরে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, তেমনি রক্তে সুগার লেভেল ঠিক রাখে।

রক্তদানের মাধ্যমে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়ঃ

রক্তদানের মাধ্যমে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। রক্তদান করলে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ যখন কমে যায়, তখন স্বাভাবিকভাবেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে আসে। কারণ রক্তসঞ্চালনে কোন সমস্যা না হলে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা অনেকটা কমে যায়।
তাই সর্বোপরি বলতে গেলে রক্তদান করলে শরীরের কোন ধরনের সমস্যা না হয়ে বরং শরীরের হাজার ধরনের উপকার সাধন করা যায়।

রক্তদানের পর আমাদের করণীয়ঃ

একজন সুস্থ মানুষ যখন অন্য কাউকে রক্ত দেয়, স্বাভাবিকভাবে প্রতিবার ৭৫০ মিলিলিটার পর্যন্ত রক্ত দিতে পারে আর এতে করে শরীরে যখন লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ কমে যায়, তা পূরণ করতে একজন স্বাভাবিক মানুষের এক থেকে দেড় মাস সময় লাগে।
আর এ সময় ভালো খাবার খাওয়া অবশ্যই দরকার। যাতে রক্তের পরিমাণ পূরণ হয়। আর অবশ্যই ৩ মাস গ্যাপ না দিয়ে অন্য কাউকে রক্ত দেওয়া উচিত নয়। এতে করে শরীরে রক্ত স্বল্পতা দেখা দিতে পারে।
তাই আমাদের সবারই উচিত রক্তদানে বিষয়ে সচেতন হওয়া। এর কোনো ধরনের সাইডইফেক্ট নেই।
রক্ত দানের ক্ষেত্রে রক্তের গ্রুপ ম্যাচ করার পরে রক্তদানে উৎসাহিত হব এবং যেকোনো সময় অন্যজনকে রক্তদানে সাহায্য করব।
এবং অন্যদেরকেও রক্তদানে উৎসাহিত করব। এতে করে হাজার জন মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয় নিজের কোনো ধরনের ক্ষতি ছাড়াই।

Leave a Comment