আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করতে যাচ্ছি তিসির উপকারিতা নিয়ে। তিসি প্রকৃতি থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা হয়।এটি একটি উদ্ভিদ উপাদান অর্থাৎ উদ্ভিদ থেকে সরাসরি তিসির বীজ আহরণ করা হয়। এটি যে কোন ধরনের মাটিতে হয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় এর উৎপাদন দেখা যায়।
তিসির উপকারিতাঃ
ভেষজ উপাদান হিসাবে তিসির বীজের কিন্তু জুড়ি মেলা ভার। আজকে আপনাদের সাথে তিসির উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করতে চলছি……
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে তিসির উপকারিতাঃ
তিসি আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। রাতে এক কাপ তিসি ভালোমতো ভিজিয়ে সকালবেলা যদি আমরা সেই তিসি পান করতে পারি, তাহলে আমাদের শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়ে যায়।
তিসি শরীরের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ
তিসি আমাদের শরীরের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং কোলেস্টরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রেখে শরীরের ওজন বৃদ্ধি রোধ করে দেয়।
তিসি মাছের অভাব পূরণ করতে কাজ করেঃ
যারা মাছ খেতে পছন্দ করেন না, তারা কিন্তু মাছ থেকে পাওয়া ওমেগা ফ্যাটি এসিড আহরণের মূল উৎস হাতছাড়া করে ফেলে। কিন্তু এক্ষেত্রে ভাববার কোন কারণ নেই, কারণ আপনারা যদি নিয়মিতভাবে তিসির বীজ আহরণ করে খাবার হিসেবে খেতে পারেন, তাহলে আপনাদের শরীরে ওমেগা ফ্যাটি এসিড এর অভাব পূরণ হয়ে যাবে।
চুলের সমস্যা দূর করতে তিসির বীজের উপকারিতাঃ
তিসির বীজ কিন্তু চুলের সমস্যা দূর করতেও দারুন কাজ করে থাকে। তিসির বীজ সারারাত ভিজিয়ে রাখার পর সকালবেলা আমলকির রসের সাথে এবং পেঁয়াজের রসের সাথে একসাথে মিক্স করে আমরা যদি মাথায় লাগায় তাহলে আমাদের চুল পড়া সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
এসিডিটির সমস্যা দূরীকরণে তিসির বীজের ভূমিকাঃ
এটি আমাদের শরীরের গ্যাসের সমস্যা দূর করতে দারুণ ভাবে কাজ করে থাকে। মধুর সাথে সামান্য পরিমাণে তিসির বীজের রস মিক্স করে আমরা যদি খেতে পারি আমাদের এসিডিটির যে সমস্যা হয় তা কিন্তু দূর হয়ে যায়।
বাতের সমস্যা সমাধানে তিসির বীজের উপকারিতাঃ
যাদের শরীরে বাতের সমস্যা থাকে, তারা তিসির বীজ থেকে রস আহরন করে প্রতিদিন রাতে শোবার আগে শরীরে মালিশ করতে পারেন। এতে করে আমাদের শরীরে বাতের সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি আমাদের ত্বক অনেক বেশি উজ্জ্বল এবং বলিরেখা দূর করে দেয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধে তিসির ভূমিকাঃ
ক্যান্সার একটি মরণঘাতী রোগ সেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু নিয়মিতভাবে আপনারা যদি পিসির বীজ খাবার হিসাবে পেতে পারেন, ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা কিন্তু আমাদের শরীর থেকে অনেকাংশে কমে যায়।
এমনকি হার্বাড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা নিয়মিত ভাবে তিসির বীজ সেবন করে তাদের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে প্রায় ৩০শতাংশ কমে যায়।
তাই আমাদের শরীরকে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে চাইলে নিয়মিতভাবে খাদ্যাভ্যাসের সাথে তিসি কে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
পিরিয়ড কালীন সময়ে পেটে ব্যথা দুর করতে তিসির গুরুত্বঃ
পিরিয়ড কালীন সময়ে মেয়েদের যে পেটে ব্যথা হয়, সেটা দূর করতেও তিসির বীজ দারুন কাজ করে থাকে। পিরিয়ড কালীন সময়ে আমরা যদি ভিজিয়ে রাখা তিসির রস খেতে পারি, তাহলে আমাদের পেটের ব্যাথা অনেকাংশে কমে যায়।
আর যাদের অনিয়মিত পিরিয়ড সমস্যা হয় তারাও কিন্তু তিসির বীজ ব্যবহার করতে পারেন। এটি আমাদের অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করতে অনেক সাহায্য করে।
মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত ও চাঙ্গা করতে তিসির ভূমিকাঃ
তিসির বীজে উচ্চ পরিমাণে আমিষ থাকে। এছাড়াও তিসির বীজ খেলে আমাদের মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন অনেক গুণে বেড়ে যায়। আমাদের মস্তিষ্ক স্বাভাবিক ভাবে কাজ করতে পারে। কাজেই বিষণ্ণতায় আমাদের মস্তিষ্ক যখন ঝিমিয়ে পড়ে তখন আমাদের মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত ও চাঙ্গা করতে তিসির বীজ কিন্তু ওষুধের মতো কাজ করে।
তাই আমাদের উচিত তিসির উপকারিতা গুলো দেখে তা নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করা।