ত্বককে দুর্দান্তভাবে ফর্সা করার জন্য কফির ফেসপ্যাক গুলোকে ব্যবহার করুন

মনকে চাঙ্গা করার জন্য সবাই কফি পান করলেও কফির এমন কিছু গুণাগুণ রয়েছে যেগুলো আমাদের ত্বককে ফর্সা করার জন্য অনেক বেশি কাজ করে।
যারা খুব অল্প সময়ের মধ্যে নিজেদের ত্বককে ফর্সা করতে চান তারা চোখ বন্ধ করে কফির উপর বসা করতে পারেন কারন কফি এমন উপাদানে তৈরি যেটি আমাদের শরীরে প্রবেশ করে আমাদের ত্বকের কোষগুলোকে ফর্সা করতে সাহায্য করে।
কফির মধ্যে আছে কেফেইন ও খুব powerfulঅ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা ত্বক হতে ডেড স্কিন টিস্যু রিমুভ করে ত্বককে ফ্রেস ও ইয়াং করে তুলবে। ত্বক হতে রোদে পুড়া কালো দাগ ,তামাটে ভাব ও ত্বকের কালচে রংও ডেড স্কিন টিস্যু রিমুভ করে দিয়ে ত্বককে ভিতর থেকে ফর্সা করে তুলে। কফি ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার পর দিনের পর দিন ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।
তাই আপনারা চাইলেই কফিব ব্যবহার করে নিজেদের ত্বককে ফর্সা করতে পারেন।

নিশ্চয় এতক্ষণে ভাবছেন

কীভাবে কফি দিয়ে ত্বক ফর্সা করা যায় ?

হা বন্ধুরা কফির ফেসপ্যাক ব্যবহার করে কফি দিয়ে ত্বকের ফর্সা করা যায় আমি আপনাদের সাথে আজকে কফির কয়েকটি ফেসপ্যাক শেয়ার করবো যেগুলো ব্যবহার করে আপনারা আপনাদের ত্বককে ফর্সা করতে পারবেন।

তবে তার আগে আপনাদের জানিয়ে দিব কফির উপকারিতাঃ

১। কফি ত্বকে ব্যবহার করার ফলে ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়ে ত্বক হবে কোমল নমনীয় এবং টানটান।
২। কফির মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটি ত্বকের কালো দাগ এবং রোদে পোড়া দাগ দূর করার জন্য কাজ করে। তাই ত্বকের মধ্যে ব্যবহার করলে ত্বক হবে ফর্সা এবং উজ্জ্বল।
৩। কফির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে শুধু ফর্সা করার জন্য কাজ করে না এটি ত্বকে বয়সের ছাপ এবং অন্যান্য সমস্যাগুলো দূর করে দিয়ে ত্বককে ফ্রেশ রাখে ।
৪। আমাদের ত্বকে বয়সের ছাপ সৃষ্টি করে ফ্রিরেডিকেল আর কফি ফ্রী রাদিক্যালস এর বিরুদ্ধে কাজ করে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না তাই কফির ব্যবহারে ত্বক সবসময় ইয়াং থাকে ।
৫। আমরা যখন রোদেরা স্পর্শ যাই তখন সূর্যের রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে আমাদের ত্বকে ইউভি ড্যামেজ শুরু হয়। কফি আমাদের ত্বককে এই ইউভি ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে ত্বককে ঠিক রাখে ।
৬। আমাদের ত্বকের রঙ সব জায়গায় সমান নয় ।কফি ত্বকের রঙের এই ভারসাম্যহীনতার ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে অর্থাৎ ত্বকের রঙ সমান করে ।
৭। বিভিন্ন কারণে আমাদের ত্বকে ক্যান্সার হতে পারে কিন্তু কফি ব্যবহার করলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায় কারণ কফি ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে ।
৮। কফি ত্বকে ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বকের মৃতকোষ উঠে যাবে যার কারণে আমাদের ত্বক কোমল নরম এবং তুলতুলে থাকবে তাই ত্বকে কফি স্ক্রাবার হিসেবে অনেক ভালো কাজ করে । ত্বক করার জন্য এটি গ্রেট স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করবে।
৯। আমাদের চোখের নিচে কালো দাগ রয়েছে তা দূর করার জন্য অনেকে অনেক ভাবে মিশিয়ে ব্যবহার করেন কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কফি আমাদের চোখের নিচের দাগ দূর করার জন্য ভালো কাজ করে এটি চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে ত্বককে ফর্সা করবে।
১০। চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে যেমন কফি সাহায্য করে ঠিক তেমনি অনেকের চেহারায় চোখের নিচে ফোলা ভাব থাকে । চোখের নিচে ফোলা ভাব দূর করে দিয়ে চোখের স্বাভাবিক করে তোলে
১১। অনেকের ত্বকে জ্বালাপোড়ার ভাব থাকে কিন্তু কফি এই জ্বালা পোড়ার ভাব কমিয়ে আনতে সাহায্য করে কারণ কফির মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রোপারটি রয়েছেন যেটি ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।
বন্ধুরা এতসব উপকারিতা জানার পর আপনারা নিশ্চয়ই কপির ব্যবহার শুরু করবেন ?
আমি আপনাদের সাথে কফির ফেসপ্যাক শেয়ার করছি যাতে আপনারা কফির ব্যবহার শুরু করলে কিভাবে আপনারা কফিকে ব্যবহার করবেন তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে না হয়

ত্বক ফর্সা করতে কফির ফেসপ্যাকঃ

ফেসপ্যাকঃ- ১
প্রয়োজনীয় উপাদানঃ

  • ২ চামচ কফি পাউডার
  • ৪ চামচ টক দই এবং
  • ২ চামচ ময়দা

তৈরি ও ব্যবহারের নিয়মঃ

সবার প্রথমে একটি পরিষ্কার বাটি নিতে হবে । এরপর বাটির মধ্যে সবগুলো উপাদান একসাথে দিয়ে এদেরকে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
সবগুলো উপাদান এমনভাবে মিশাবেন যাতে ময়দার দলা থেকে না যায় অর্থাৎ এদেরকে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে ।
খুব ভালোমতো স্মুথ পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে এদেরকে একটি ব্রাশের সাহায্যে ত্বকের মধ্যে এপ্লাই করে নিন । এটি যখন ত্বকে এপ্লাই করবেন তখন খুব ভালোভাবে লাগিয়ে নিবেন। আপনারা চাইলে এটি গলা এবং ঘাড়ের লাগাতে পারেন ।
ফেসপ্যাকটি এপ্লাই করার পর এটি পুরোপুরি শুকিয়ে যাবার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।
এটি যখন পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে তখন পরিষ্কার জল দিয়ে ত্বক ধুয়ে নেবেন
এটি ব্যবহার করার পর যাদের ত্বক শুষ্ক তারা যে কোন ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম এপ্লাই করবেন ।

কাজ করার কারণঃ
টকদইঃ
আপনারা যদি টকদই বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন তাহলে এটি আপনাদের ত্বকের জন্য খুব ভাল হবে।
দইয়ের মধ্যে থাকা ভিটামিন বি ৫ ত্বক হতে কালো দাগ,বয়সের ছাপ ও ব্রণের দাগকে দূর করে দিয়ে ত্বককে দাগহীন করে তুলবে।
এছাড়াও দইয়ের মধ্যে বিদ্যমান রাইবো ফ্লেবিন ত্বকে নতুন কোষের গ্রোথ বাড়িয়ে দেয় যার ফলে ত্বক ইয়াং ও গ্লোয়ি হয়ে ওঠে ।

ময়দাঃ
ময়দাতে রয়েছে Clanging প্রোপার্টি যা ত্বক হতে বয়সের ছাপ ,বলিরেখা ও ত্বকের সমস্ত কালো রং ও কাল দাগকে দূর করে দিয়ে ত্বককে নিমিশেই ফর্সা করে তুলে । এছাড়াও ময়দার মধ্যে মিনারেলস্‌ ও অ্যামিনো এসিড থাকায় এটি ত্বকে ব্যবহারের ফলে ত্বক সুস্থ ও মসৃণ হয়ে উঠে।

নোটঃ

১। এই ফেসপ্যাকটি কে আপনারা একদিন পর পর ব্যবহার করতে পারবেন । আপনাদের হাতে যদি এটি একদিন পর পর ব্যবহার করার সময় না থাকে তাহলে আপনারা সপ্তাহের দুবার ব্যবহার করবেন ।
২। যেহেতু এটি একদিন পরপর ব্যবহার করতে হবে অনেকেই এটিকে ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করতে চাইবেন কিন্তু একটি ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করবেন না

ফেসপ্যাকঃ- ২
প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
কফি পাউডার ২ চামচ
বেসন ২ চামচ
গোলাপজল ৪ চামচ এবং
ভিটামিন ই ১টি
তৈরি ও ব্যবহারের নিয়মঃ
একটি পরিষ্কার বা টির মধ্যে সবগুলো উপাদান নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে । এটি ভালো করে মিশে যাবার পর ত্বকের মধ্যে এপ্লাই করার জন্য উপযুক্ত হয়ে যাবে।
এবার এটিকে ত্বকের মধ্যে এপ্লাই করে নিন । এটি এপ্লাই করার পর ত্বককে 5 মিনিট ম্যাসাজ করুন ।
5 মিনিট ম্যাসাজ করার পর এটি ত্বকের মধ্যে আরও 10 থেকে 15 মিনিট রেখে দিন।
এটি ত্বকের মধ্যে পুরোপুরি শুকিয়ে যাবার পর ত্বক পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিবেন।
কাজ করার কারণঃ
বেসনঃ
আমাদের ত্বকের মধ্যে সারা দিনে জমে থাকা ধুলো ময়লাকে ত্বক হতে দূর করে ত্বককে খুব দ্রুত মসৃণ ও ফর্সা করে তুলার জন্য বেসন ত্বকের মধ্যে অসাধারণ কাজ করে থাকে। বেসনের মধ্যের consistable element ও Natural skin lightening property আমাদের ত্বক থেকে Fine line, wrinkles, pimples, age spot কে সরিয়ে ফেলে ত্বকের টোন সমান করে স্কিন কালার ব্ল্যালেন্স করে স্কিন এ অন্যরকম একটি উজ্জ্বলতা নিয়ে আসে। যা ত্বকের মধ্যে অসাধারণ উজ্জ্বলতা নিয়ে আসবে।
ভিটামিন ইঃ
এটি ত্বকের ডার্ক সার্কেলস্‌কে remove করে দিয়ে ত্বককে ফর্সা করে তুলবে
ভিটামিন ই ত্বক হতে মৃতকোষ দূর করে ত্বককে নরম করে তোলে। এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে অনেক ভালো কাজ করে।
গোলাপজলঃ
গোলাপজল ত্বকে টোনার হিসেবে কাজ করে ত্বককে ফ্রেশ রাখে ।
নোটঃ
রেমেডি যেহেতু সবগুলো প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি তাই এর কোন সাইড ইফেক্ট নেই। তাই খুব ভালো ফলাফল পাবার জন্য এই ফেসপ্যাকটি কে সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন।
বন্ধুরা আপনারা তো কফির উপকারিতা এবং কফির ফেইস প্যাক গুলো সম্পর্কে জানলেন। আপনাদের কাছে থাকা উপকরণ গুলোর সাহায্যে আপনারা যে ফেসপ্যাকটি সহজে তৈরি করতে পারবে সেই ফেসপ্যাক তৈরি করে আপনারা ব্যবহার করুন।
যেকোনো একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে ব্যবহার করলে আপনারা ভাল ফলাফল পাবেন আর এর ফলাফল অবশ্যই আমার সাথে শেয়ার করবেন ।

Leave a Comment